আপনি হুমাযাতিল লুমাযাহ এর মধ্যে পড়ছেন না তো!
#হুমাযাহ হচ্ছে কারও পেছনে কথা লাগানো, গীবত করা। আর লুমাযাহ হচ্ছে কাউকে সামনা-সামনি দোষ ধরে অপমান করা, বাজে আচরণ করা।[৫][১৮] কিছু উদাহরণ দেই—
#
#হুমাযাতিল লুমাযাহ হচ্ছে এমন এক ধরনের মানুষ, যে অন্যকে তুচ্ছ, তাচ্ছিল্য করে। মানুষের দিকে তাচ্ছিল্য ভরে আঙ্গুল দেখায়। চোখের ইশারা করে ব্যাঙ্গ করে। কারও চরিত্রের কোনো দিক নিয়ে ব্যঙ্গ করে। কারও মুখের উপর তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করে। কারও পেছনে তার দোষ বলে বেড়ায়। এর নামে ওর কাছে কথা লাগায়। মানুষে-মানুষে সম্পর্কে ফাটল ধরায়। —এটা তারা একবার দুইবার করে না। বরং এরকম করা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এরা হচ্ছে হুমাজাতিল লুমাযাহ।[১৮][৭]
#ফোন এসেছে। ওপাশ থেকে বলছে, “ভাবী, কেমন আছেন? আপনাকে অনেকদিন ফোন করে পাই না।” ভাবী উত্তর দিলেন, “আমার ফোনটা নষ্ট ছিল। ঠিক করতে দিয়েছিলাম।” ওপাশ থেকে, “ঠিক করতে? কেন ভাইসাহেব কি আপনাকে নতুন ফোন কিনে দেয় না? আজকাল সবার হাতে আমি-ফোন ৭। আমাকে ও নতুন মডেল বের হলেই কিনে দেয়। আপনারটা তো বোধহয় এখনও আমি-ফোন ৪ তাই না?” ভাবী বললেন, “না, না, অবশ্যই দেয়। আমি নিজেই কিনি না। আগেরটা তো চলছেই।” ওপাশ থেকে, “এটা কেমন কথা হলো? আপনি ঘরের সব কাজ করেন। বাচ্চাদের পালেন। আবার আপনাকে ভাঙ্গা ফোনও চালাতে হবে? ভাই মনে হচ্ছে আপনাকে ঠিকমতো কদর করেন না।”
ব্যাস, ভাবীর মাথায় ঢুকে গেলো, “ভাই আপনাকে ঠিকমতো কদর করেন না।” প্রথমে একটু মন খারাপ হলো। তারপর অভিমান। অভিমান বাড়তে বাড়তে রাগে পরিণত হলো। রাগ থেকে ঘৃণা। সন্ধ্যায় স্বামী যখন ঘরে ঢুকল, তখন থমথমে অবস্থা। স্বামী যখন বলল, “ইয়ে, খুব ক্ষুধা লেগেছে, একটু নাস্তা দেবে?”, সাথে সাথে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ!
—ফোন যে করেছিল, সে হচ্ছে হুমাযাহ। এরা মানুষে মানুষে কথা লাগায়। কানা-ঘুষা করে। অন্যের চরকায় তেল দেওয়া হচ্ছে এদের জীবিকা। এরা তাদের লিকলিকে জিভ দিয়ে অন্যের অন্তরে বিষ ঢেলে দেয়।
২.#
স্ত্রী গরমে ঘেমে অনেক সময় নিয়ে চা-নাস্তা বানিয়ে নিয়ে এসেছে। শ্বশুর, শাশুড়ি সবাই বসে খাচ্ছে। স্বামী চায়ে চুমুক দিয়ে বিরক্ত হয়ে বলছে, “নাহ, এখনও তুমি মা’র মত চা বানাতে শিখলে না। কতবার বললাম মা’র কাছ থেকে দেখো কতখানি লিকার দিতে হয়। মা! ওকে দেখিয়ে দিয়েন তো কীভাবে চা বানাতে হয়।” — এ হচ্ছে লুমাযাহ। এরা সুযোগ পেলেই মানুষের মুখের উপর তার বদনাম করে। কারও কোনো দোষ ধরার সুযোগ পেলে সহজে ছেড়ে দেয় না। সারাদিন একে ধমকানো, ওকে খোঁচা মারা, একে গালি দেওয়া, ওকে ব্যঙ্গ করা, এগুলো হচ্ছে এদের স্বভাব। এদের নিজেদের দোষের কোনো শেষ নেই। নিজের দোষ ঢাকার জন্য এরা সবসময় অন্যের দোষ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এদের জিভ হচ্ছে একটা ধারালো অস্ত্র। এই অস্ত্র দিয়ে সারাদিন এরা একের পর এক মানুষের হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করতে থাকে।
# আর এক দল রয়েছে যারা অর্থ সম্পদ গচ্ছিত করে,সারাদিন তাদের সম্পদ নিয়ে ব্যস্ত থাকে,অথচ তারা জানেনা হাশরের দিন তাদের এ সম্পদ কোন কাজেই আসবেনা।মনে করে যে, তার সম্পদ তাকে অমর করে রাখবে।
রকম থাকবে। সম্পদ জমা করার এবং তা গুণে রাখার কাজে সে এতই মশগুল যে, নিজের মৃত্যুর কথা তার মনে নেই। তার মনে কখনও এই চিন্তার উদয় হয় না যে, এক সময় তাকে সব কিছু ছেড়ে দিয়ে খালি হাতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। তাছাড়া তাকে তার সম্পদের হিসেবও দিতে হবে।[১৮] সূরাহ আশ-শুয়ারাহ’তে আল্লাহ تعالى এই মানসিকতাকে প্রশ্ন করেছেন—
কী কারনে তোমরা উঁচু জায়গায় যত সব অর্থহীন স্মৃতিচিহ্ন বানাও? আর নিজেদের জন্য বিশাল ভবন বানাও, তোমরা কি মনে করো যে, তোমরা চিরকাল বেঁচে থাকবে? — আশ-শুয়ারাহ ২৬:১২৮-১২৯
#এদের সাথে আল্লাহ কি করবেন তার বর্ননা করেছেন,সূরা হুমাযাহ তে।
সূরা হুমাযাহ:
অর্থঃ প্রত্যেক পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর দুর্ভোগ,
যে অর্থ সঞ্চিত করে ও গণনা করে।
সে মনে করে তার অর্থ চিরকাল তার সাথে থাকবে।
কখনোই না,সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে পিষ্টকারীর মধ্য।
পিষ্টকারী হচ্ছে আল্লাহর প্রজ্জ্বলিত অগ্নি,যা হৃদয় পর্যন্ত পৌছাবে।
#আল্লাহ تعالى এদেরকে অভিশাপ দিচ্ছেন যে, এরা ধ্বংস হয়ে যাক। মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে অভিশাপ পাওয়া এক ভয়ংকর ব্যাপার। এর পরিণাম নিশ্চিত ধ্বংস এবং অনন্তকালের জন্য প্রচণ্ড কষ্ট। এমন কষ্ট যা কেউ কোনোদিন কল্পনাও করতে পারবে না।
#কুর‘আনে আল্লাহ تعالى রোজা না রাখার জন্য বা হাজ্জ না করার জন্য এমন ভয়াবহ শাস্তির বর্ণনা দেননি। এমনকি বেনামাজিদের জন্য তিনি যে বিশেষ আগুন ‘সাক্বর’ তৈরি করেছেন, সেটাকেও তিনি ‘আল্লাহর আগুন’ বলেননি। কিন্তু যারা পরনিন্দা করে বেড়ায়, মানুষকে সামনাসামনি অপমান করে, কৃপণের মতো নিজের সম্পত্তি আগলে রাখে — এদেরকে তিনি تعالى এতটাই ঘৃণা করেন যে, এদের জন্য তিনি تعالى বিশেষ শাস্তি নিজে তৈরি করে রেখেছেন। এখান থেকে আমরা দেখতে পাই যে, আমরা যতই নামাজী, রোজাদার, টুপি-দাঁড়িওলা হই না কেন, যদি সম্পদের কৃপণতা এবং মানুষের প্রতি অন্যায় করা আমাদের অভ্যাস হয়, তাহলে আমাদের জন্য সৃষ্টিজগতের ভয়ংকরতম শাস্তি অপেক্ষা করছে।
#আমরা সমাজের প্রতি ঘরেই এরকম বৈশিষ্ট্যময় মানুষ দেখতে পাই,যারা অন্যর অন্তর কে বিষিয়ে দিতে সদা প্রস্তুত থাকে,,,,,,,,,,আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুন।।।i
frm: কুরআনের কথা
No comments