শালী/দুলাভাই - দেবর/ভাবি এসব সম্পর্ক এবং বাড়াবাড়ি
(কথাগুলো রুক্ষ হলে ক্ষমা করবেন)
#শালী/দুলাভাই ও দেবর ভাবীঃ
বর্তমানে বউ এর কাজগুলো যেন সব শালী ই নিয়ে নিয়েছে,দুলাভাই এর গা হাত পা মাসাজ থেকে শুরু করে হাসী-ঠাট্টা সবি চলে তাদের মাঝে।দ দুলাভাই আর শালী (শ্যালিকা)। দেখা যায়, যত ইচ্ছা খুনসুটি আর শয়তানি চলতে থাকে দুলাভাই আর শালীর মধ্যে। এগুলো দেখে এমন প্রতীয়মান হয় যে, শালী যেনো দুলাভাইয়ের কাছে নিজের বউয়ের মতোই! আস্তাগফিরুল্লাহ
#আর দেবর এর তো ভাবীর কাছে বহুত দাবী।দাবির যেন শেষ নেই।
দেবর কে তো ইসলামে মৃত্যু সমতুল্য ঘোষনা করে দিয়েছে তবুও তারা কেন বুঝেনা।
প্রচলিত আরেকটি প্রবাদ হলোঃ "স্বামী আমার যেমন-তেমন/ দেবর আমার মনের মতন" (আস্তাগফিরুল্লাহ)। এসব আশ্লীল ও নোংরা কথা আমরা প্রায়ই শুনতে পাই।
!
#অথচ, তাদের সম্পর্কে আমাদের ইসলামী শরিয়াহ কি বলে দেখুনঃ
।দেবর এবং ভাবী, কিংবা দুলাভাই এবং শ্যালিকা - ইসলামী শারীয়াহ-তে এরা একে অপরের জন্য গায়ের-মাহরাম। অর্থাৎ আর পাঁচজন গায়ের-মাহরামের মতো এদের জন্যও একে অপরের সামনে পর্দা করা ফরজ।
শুধু তাই নয়, বরং অন্য গায়ের-মাহরামের তুলনায় এই সম্পর্কগুলোর ক্ষেত্রে আরো বেশী দূরত্ব এবং সাবধানতা
বজায় রাখা উচিত। কেননা এই সম্পর্কগুলো অন্যগুলোর চেয়ে আরো বেশী বিপজ্জনক।
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ "তোমরা নারীদের নিকট প্রবেশ করা থেকে সাবধান থেকো।" একথা শুনে আনসার গোত্রের এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলো, কিন্তু দেবর সম্পর্কে আপনার মত কী? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ "দেবর! দেবর তো মৃত্যুর সমতুল্য!" (বুখারীঃ ৫২৩২, মুসলিমঃ ২১৭২)
সুবহানআল্লাহ! আল্লাহর রাসূল এখানে দেবরকে মৃত্যুর সমতুল্য বলেছেন। অথচ আমাদের সমাজ দেবরকে যেনো "দ্বিতীয় বর" হিসেবে বানিয়ে রেখেছে! আস্তাগফিরুল্লাহ!
আল্লাহ যে জিনিসকে হারাম করেছেন সমাজ তাকে প্রতিনিয়ত ই হালাল করার চেষ্টায় লেগে রয়েছে।কেও এর প্রতিবাদ করতে গেলে যেন সব তার উপল হামলে পড়ে।
তাই ভাই ও বোনেরা! সাবধান হোন! সমাজের সমস্ত রকমের অশ্লীল ও বেহায়া প্রচলন থেকে বের হয়ে আসুন। এবং কেবলমাত্র কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী জীবনযাপন করুন।
মনে রাখবেন, আপনার দেবর কিংবা আপনার দুলাভাই - এরা আপনার কাছে একজন গায়ের-মাহরাম। তাই এদের সামনে পরিপূর্ণ পর্দা করা আপনার জন্য ফরজ!
#আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “(হে নবী) মুমিন পুরুষদেরকে বলো, তারা যেনো তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গকে হেফাযতে রাখে; এটিই তাদের জন্য উত্তম। ওরা যা করে, আল্লাহ সে বিষয়ে অবহিত। আর মুমিন নারীদেরকে বলো, তারা যেনো নিজেদের দৃষ্টি সংযত করে ও লজ্জাস্থান হিফাজত করে এবং যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে, এবং তারা যেনো তাদের 'খিমার' (মাথার কাপড়, ওড়না, অথবা চাদর) দ্বারা তাদের 'জুয়ুব' (মুখমণ্ডল সহ গ্রীবা ও বক্ষদেশ) আবৃত করে রাখে।” (সুরাহ নূর, ২৪:৩০-৩১)
#রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “প্রত্যেক আদম সন্তানের উপর ব্যভিচারের কিছু অংশ লিপিবদ্ধ হয়েছে, সে অবশ্যই তার মধ্যে লিপ্ত হবে। দুই চোখের ব্যভিচার হলো দৃষ্টি, দুই কানের ব্যভিচার হলো শ্রবণ, মুখের ব্যাভিচার হলো কথা বলা, হাতের ব্যভিচার হলো স্পর্শ করা এবং পায়ের ব্যভিচার হলো অগ্রসর হওয়া। আর অন্তর আশা ও আকাঙ্ক্ষা করতে থাকে। লজ্জা স্থান তাকে বাস্তবায়ন করে অথবা মিথ্যায় পরিণত করে।” (মুসলিম - ২৬৫৭, ৬৫১৩)
#
#
সেইসাথে অল্প সময়ের জন্য হলেও দু'জনের একসাথে কোনো কামরা বা স্থানে নির্জনতা অবলম্বন করা পুরোপুরিভাবে হারাম। সেইসাথে দেবরের সাথে একাকী বাপের বাড়ি যাওয়া, কিংবা দুলাভাইয়ের সাথে একাকী বোনের বাড়ি যাওয়া, অথবা অন্য কোনো প্রয়োজনে কিংবা নিছক বিলাস-বিহারে দু'জনে একাকী ঘুরতে যাওয়া - এগুলো সবই পুরোপুরিভাবে হারাম।
তবে এগুলো শুধু দেবর আর ভাবী, কিংবা দুলাভাই আর শালীর ক্ষেত্রেই নয়, বরং প্রত্যেক গায়ের-মাহরাম নারী-পুরুষের জন্যই এগুলো প্রযোজ্য। যেমন কাজিন ভাই-বোন, অর্থাৎ মামাতো, খালাতো, চাচাতো, ফুফাতো ভাই-বোনদের ক্ষেত্রেও এই সমস্ত ব্যাপারে আমাদেরকে সাবধান থাকা উচিত। সেইসাথে ছেলেদের ক্ষেত্রে আপন খালা, ফুফু ছাড়া সমস্ত রকমের খালা, ফুফুর বেলাতেও। এবং আপন চাচী কিংবা মামীর বেলাতেও। একইভাবে মেয়েদের ক্ষেত্রে আপন মামা, চাচা ছাড়া সমস্ত রকমের মামা, চাচার বেলাতেও। এবং নিজের খালু কিংবা ফুফার বেলাতেও।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘শুনে রাখো, কোনো পুরুষ যেনো কোনো মহিলার সঙ্গে নিভৃতে একত্রিত না হয়, অন্যথায় শয়তান অবশ্যই তৃতীয় জন হিসাবে হাযির থাকে।’’ (সুনান তিরমীযী ২১৬৮, ইবনু মাজাহ ২৩৬৩)
প্রিয়জন দের হেদায়েত চেয়ে দোয়া ছাড়া আর কিছুই যে করার নেই আমাদের।
No comments