সমাজের প্রচলিত শিরক | জেনে নিন | সতর্ক থাকুন
''সমাজে প্রচলিত শিরক "
____________________
👉শিরক কি ?
শিরকের পরিণাম কি?
এখানে ৪০ টি শিরকের বর্ণনা দেয়া হলোঃ
.
♦শিরক হচ্ছে সকল পাপের চাইতে বড় পাপ।
আল্লাহ তা’আলা যা কক্ষনো ক্ষমা করবেন না। যদি কোন ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে শিরক করে মারা যায় তাকে চিরস্থায়ী জাহান্নামে থাকতে হবে। শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, শিরকের ভয়বহতা এত বেশি, যে শিরক মানুষের সব আমাল নস্ট করে দেয়, মানুষকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেয়
.
🌼আল্লাহ তা‘আলা বলেনঃ
إِنَّ اللَّهَ لَا يَغْفِرُ أَن يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَٰلِكَ لِمَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا
“নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাথে শিরকের অপরাধ ক্ষমা করবেন না। আর ইহা ব্যতীত যাকে ইচ্ছা (তার অন্যান্য অপরাধ) ক্ষমা করে দেন।”
(সূরা আন-নিসা ৪: ৪৮)
.
🌼হাদিসের বর্ণিত আছে “যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে কিছু শরিক না করে মারা যাবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে কিছু শরিক করা অবস্থায় মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।” (মুসলিম-৯৩)
কুরআনে আল্লাহ বলেন,
وَإِذْ قَالَ لُقْمَانُ لِابْنِهِ وَهُوَ يَعِظُهُ يَا بُنَيَّ لَا تُشْرِكْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ
“যখন লোকমান তাঁর পুত্রকে উপদেশ দিয়ে বললেনঃ হে বৎস! আল্লাহর সঙ্গে শিরক করনা; কেননা শিরক সবচেয়ে বড় অন্যায় ” (সূরা লোকমান ৩১:১৩)।
.
🌼মহিয়ান গরিয়ান আল্লাহ তা’য়ালা বলেন,
إِنَّهُ مَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ ۖ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ
“নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদাহ -৫:৭২)
আল্লাহ তা’আলা তার প্রিয় নাবীকে সাবধান করে বলেন,
وَلَقَدْ أُوحِيَ إِلَيْكَ وَإِلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكَ لَئِنْ أَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُونَنَّ مِنَ الْخَاسِرِينَ
“আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের পতি প্রত্যাদেশ হয়েছে, যদি আল্লাহর শরীক স্থির করেন, তবে আপনার কর্ম নিষ্ফল হবে এবং আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের একজন হবেন। ”(সূরা যুমার-৩৯:৬৫)
🍁
অতএব এ আয়াৎ থেকে আমরা জানতে পারি নাবী (সা) যদি শিরক করতো তাহলে তার সমস্ত আমল ধ্বংস হয়ে যেত অতএব আমরা উম্মতরা কোথায় আছি। সুতরাং শিরক থেকে সাবধান, শিরক থেকে সাবধান, শিরক থেকে সাবধান। হে আল্লাহ, হে বিশ্বজগতের পালনকর্তা তোমার কাছে আমরা যাবতীয শিরক থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমীন। সুম্মা আমীন।
একনজরে আমাদের সমাজে প্রচলিত শিরক
নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
.
♦1. আহবানের শিরকঃ
আহ্বানের শিরক বলতে মানুষের ক্ষমতার বাইরে এমন কোন পার্থিব লাভের আশায় অথবা কোন পার্থিব ক্ষতি হতে রক্ষা পাবার উদ্দেশে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে আহবান করা বুঝায়। (সূরা জিন ৭২:১৮, রাদ-১৩:১৪, মারিয়াম-১৯:৪৮)
♦2. ফরিয়াদের শিরকঃ
ফরিয়াদের শিরক বলতে নিতান্ত অসহায় অবস্থায় আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সাহায্যের জন্য ডাকাকে বুঝায়। রোগ নিরাময়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকা। (সূরা আনফাল-৮:৯, আনকাবুত-২৯:৬৫)
♦3. আশ্রয়ের শিরক-
কোন অনিষ্টকর বস্তু বা ব্যক্তি হতে বাঁচার জন্য আলাহ ব্যতিত অন্য কারো কাছে আশ্রয় নেয়া বা সরনাপন্ন হওয়া। (সূরা ফুসসিলাত/ হা মিম আসসাজদাহ-৪১:৩৬, সূরা মুমিনুন-২৩:৯৭-৯৮, সূরা ফালাক ১১৩:-১-৫, সূরা নাস ১১৪:১-৬)
♦4. আশা বা বাসনার শিরক-
মানুষের অসাধ্য কোন বস্তু আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে কামনা করা। যেমন, কোন পিরের কাছে সন্তান কামনা করা। (সূরা আশ-শুআরা-৪২:৪৯,৫১)
♦5. নামাজের শিরক-
রুকু, সিজদাহ, সওয়াবের আশায় কোন ব্যক্তি বা বস্তুর সামনে বিনম্রভাবে দাঁড়ানো বা নামাজের শিরক বলতে একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতগুলো ব্যয় করাকে বুঝান হয়। (সূরা হাজ্জ-২২:৭৭, আনআম-৬:১৬২-১৬৩)
♦6. তাওয়াফের শিরক-
কাবা ঘর ব্যতিত অন্য কোন বস্তুর তাওয়াফ করা।(হাজ্জ-২২:২৯, বাকারাহ-২: ১২৫)
♦7. তাওবার শিরক-
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে তাওবা করা। (সূরা নুর-২৪:৩১, আল ইমরান-৩:১৩৫)
.
♦8. জবাইয়ের শিরক-
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নৈকট্য লাভের জন্য পশু জবাই করা। চাই তা আল্লাহর নামেই করা হোক বা অন্য কারো নামে বা নাবী বা জিনের নামে। (সূরা আনআম- ৬:১২১, ১৬২-১৬৩)
♦9. মানতের শিরক-
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারোর জন্য মানত করা। (সূরা-হাজ্জ-২২:২৯, বাকারাহ-২:২৭০, আনআম-৬:১৩৬)
.
♦10. আনুগত্যের শিরক-
বিনা ভাবনায় শরিয়তের গ্রহণযোগ্য কোন প্রমান ছাড়াই হালাল হারাম জায়েজ নাজায়েজের ব্যপারে আলেম বুজুর্গ বা উপরস্থ কারো সিদ্ধান্ত অন্ধভাবে সন্তুষ্ট চিত্তে মেনে নেয়া।(তাওবা-৯:৩১, আনআম-৬:১২১,আরাফ-৭:৩,)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্ধভাবে চার মাঝহাবের চার জন মহামতি ইমামের অন্ধ অনুসরণ করাও শিরক। উপরন্তু এই চার জন মহান ব্যক্তি কখনই নিজেকে অন্ধভাবে অনুসরন করতে বলেনি। যদি কোন ব্যক্তি মনে করে বর্তমান যুগে ইসলামিক শাসনব্যবস্থা অচল এবং গণতন্ত্র, রাজতন্ত্র,পীরতন্ত্র,ধরমনিরপেক্ষ মতবাদ ইত্যাদিই হল আধুনিক পদ্ধতি তাহলে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে। খ্রিস্টানরা তাদের আলিমদের উপাসনা করত না তবে তারা হালাল হারামের ব্যপারে বিনা প্রমানে তাদের আলিমদের সিদ্ধান্ত মেনে নিত। আর এটিই হচ্ছে শিরক। (তিরমিজি-অধ্যায় ৪৭ হা: নং ৩০৯৫)
♦11. ভালবাসার শিরক-
দুনিয়ার কাউকে এমন ভাবে ভালবাসা যাতে তাঁর আদেশ নিষেধ কে আল্লাহ তাআলার আদেশ নিষেধের উপর প্রাধান্য দেয়া অথবা সমপর্যায়ের মনে করা। প্রকৃতিগত ভালবাসা (খাবার), স্নেহ জাতীয় ভালবাসা (সন্তানের জন্য পিতার), আসক্তিগত ভালবাসা (স্বামীর জন্য স্ত্রীর) ইত্যাদির কোনটাকেই আল্লাহ তাআলার ভালবাসার উপর স্থান দেয়া যাবে না। (বাকারাহ-২:১৬৫, তাওবা-৯:২৪)
♦12. ভয়ের শিরক-
একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কাউকে প্রকাশ্যভাবে দুনিয়া বা আখিরাত সংক্রান্ত যে কোন ক্ষতি সংঘটন করতে পারে বলে অন্ধ বিশ্বাস করে তাকে ভয় পাওয়াকে বুঝানো হয়। মানুষ, মূর্তি, জিন ইত্যাদির অনিষ্টতা থেকে ভয় পাওয়া শিরক। প্রভাবশালি শাসকের ভয়ে ভাল কাজ বা জিহাদ হতে দূরে থাকা ছোট শিরক। তবে শত্রুর ভয়, বাঘের ভয় ইত্যাদি স্বাভাবিক ভয় শিরকের অন্তরভুক্ত নয়। (সূরা আনাআম- ৬:৮০-৮১, হুদ-১১:৫৪-৫৫, তাওবাহ-৯:১৩)
♦13. ভরসার শিরক-
মানুষের অসাধ্য ব্যপারসমুহের ক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো প্রতি ভরসা করা। কারো সমস্যা দূরীকরণ, চাকরি লাভ, রোগমুক্তি ইত্যাদি ব্যপারে আল্লাহর উপরেই ভরসা রাখতে হবে। দান, সাদাকার ব্যপারে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তির উপর ভরসা ছোট শিরক। তবে কোন প্রতিষ্ঠানের মালিক তাঁর কর্মচারীদের উপর মালামাল উৎপাদন বা কোন সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ভরসা করতে পারে। তবে সম্পূর্ণরূপে ভরসা করা শরিয়াতে জায়েজ নয়।(মায়িদাহ-৫:২৩, ইউনুস-১০:৮৪)
♦14. সুপারিশের শিরক-
আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো কাছে পরকালের মুক্তির জন্য সুপারিশ কামনা করা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। (জুমার-৩৯:৪৪, আনাআম-৬: ৫১, বাকারাহ-২:২৫৫)
♦15. হিদায়াতের শিরক-
আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ কাউকে হিদায়াত করতে পারে এমন বিশ্বাস করা অথবা কারো নিকট হিদায়াত কামনা করা। (বাকারাহ-২:২৭২, ইউসুফ-১০:১০৩)
♦16. সাহায্য প্রার্থনার শিরক-
মানুষের সাধের বাইরে কোন কাজ একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট কামনা করা। (ফাতিহা-১:৫)
♦17. কবরের শিরক-
কবরে শায়িত কারো জন্য ইবাদাত ব্যয় করা। অর্থাৎ সেখানে সালাত আদায় করা, সিজদাহ করা শিরক (মুসলিম-৯৮৯)
তাঁর নিকট কিছু চাওয়া। তাঁর (ওসীলায়) মাধ্যমে আল্লাহর নিকটে কিছু চাওয়া। সেখানে মসজিদ নির্মাণসহ আরও অসংখ্য শিরক বিদ্যমান। (নুহ-৭১:২৩, ) (বুখারি- ৪২৭,২৮)
♦18. আল্লাহর অবস্থান সম্পর্কিত শিরক-
আল্লাহ মুমিনের অন্তরে বিরাজমান মনে করা। আল্লাহ সবার অন্তরে বিররাজমান মনে করা।আল্লাহ সকল বস্তুর মাঝে লুকায়িত মনে করা।
#আল্লাহ_সম্পর্কে_সহিহ_আকিদা_হল_তিনি_আরশের_উপর_অবস্থান_করছেন_তাঁর_আকার_আছে_কিন্তু_তিনি_তাঁর_মত__তার সদৃশ (মত)কেউ নেই। (মূলক- ৬৭:১৬-১৭, , ইমরান- ৩:৫৫, আরাফ- ৭:৫৪)
♦19. দেখা ও শোনার শিরক-
আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মানুষ হোক নাবি বা রসুল সব শুনতে বা দেখতে পান এমন মনে করা শিরক। (সূরা ইউনুস- ১০:৬১, তাহা-২০:৪৬)
♦20. কিয়ামতের শিরক-
কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কোন নাবি, রসুল, পীর, অলি, ইত্যাদি মানুষরা অন্যান্য মানুষদের আজাব হতে বাচাতে পারবে এটা মনে করা শিরক। এছাড়া অন্য কেউ মানুষকে আল্লাহর আজাব হতে কাউকে ক্ষমা করাতে পারবে এমনটা মনে করাও শিরক। (সূরা তাহরিম- ৬৬:১০, শুআরা- ২৬:২১৪, তাওবাহ- ৯:৮০)
♦21. গায়েব জানার শিরক-
আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন মানুষ হোক নাবি, রসুল, বুজুর্গ গায়েব জানেন এমনটা বিশ্বাস করা শিরক। (সূরা নামল- ২৭:৬৫, সূরা আনআম- ৬:৫০-৫৯)
♦22. মানুষের অন্তরের কথা-
আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ মানুষের মনের কথা জানেন না। এর বিপরীতে বিশ্বাস করা শিরক। (সূরা মুলক- ৬৭:১৩,১৪)
♦23. আল্লাহ ছাড়া সন্তান সন্ততি কেউ দিতে পারে-
আল্লাহ যাকে চান সন্তান দিতে পারেন। অন্য কারো এই ক্ষমতা নেই। (সূরা শুরা- ৪২:৪৯-৫০)
♦24. আল্লাহ ছাড়া সুস্থতা-
একমাত্র আল্লাহ তাআলাই মানুষকে সুস্থতা দান করতে পারেন, অন্য কেউ নয়। (সূরা শুআরা- ২৬:৭৮-৮২)
♦25. কাজ করার শিরক-
আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ ইচ্ছা করলেই কোন ভাল কাজ করতে পারবে বা কোন খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারবে এমন মনে করা শিরক। (সূরা হুদ-১১: ৮৮)
♦26. ক্ষতির শিরক-
আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ কারো ক্ষতি করতে পারে এমনটা মনে করা শিরক। (সূরা ফাতহ- ৪৮:১১)
♦27. জীবন মৃত্যু-
আল্লাহ ছাড়া কেউ কাউকে বাঁচাতে পারে বা মারতে পারে এমন মনে করা শিরক। (সূরা মুমিন- ৬৮)♦28. আল্লাহ ছাড়া সবাই মৃত- যদি কেউ মনে করেন আল্লাহ ছাড়াও অন্য কোন নাবি,রসুল,গাউস,কুতুব সর্বদা জীবিত রয়েছেন তাহলে সে শিরক করছে। (সূরা রাহমান- ৫৫:২৬-২৭,সূরা ইমরান- ৩:১৮৫,১৪৪, সূরা জুমার- ৩৯:৩০)
♦29. আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ বিশ্ব পরিচালনা করেন-
কোন নাবি, রসূল, গাউস, কুতুব, ওলি বিশ্ব পরিচালনায় অংশ নেন, একথা মনে করা শিরক। আল্লাহ তাআলা সময়কেও নিয়ন্ত্রন করেন। তাই সময় বা যুগকে গালি দেয়া গর্হিত কাজ। (সূরা রাদ- ১৩:২,সূরা ইউনুস- ১০:৩১, সূরা সাজদাহ-৩২:৫)
♦30. অন্তরের পরিবর্তন-
একমাত্র আল্লাহ তাআলাই কারো অন্তরের পরিবর্তন ঘটাতে পারেন। এর ব্যতিক্রমে বিশ্বাস করা শিরক। (সূরা আনফাল- ৮:২৪) (তিরমিজি- ৩৫২২)
♦31. যাদু-
টোনা, বাণ মারা।
♦32. ওরশ :
অনেক মাযারে ও পীরের দরবারে অমাবস্যা, পূর্ণিমা, পীরের জন্ম বা মৃত্যু তারিখ নির্দিষ্ট করে ওরশ হয়ে থাকে। বেপর্দা অবস্থায় নারী-পুরুষ একত্রে বসে যিকির করে, কাওয়ালী গান শোনে। ভন্ড পীর, ফকীররা এ সব ওরশে ওয়ায নসীহ’তের নামে শরী‘আত বিরোধী আক্বীদা-বিশ্বাসপ্রচার করে। শাহী তবারক রান্না করা হয়। ওরশের পরে যে টাকা অবশিষ্ট থেকে যায়, তা পীর ও তার খাদেমদের পকেটে চলে যায়। ওরশ মূলতঃ আনন্দোৎসব ও টাকা উপার্জনের পন্থা হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
♦33. খাজা বাবার ডেগ :
একদল লোক বিশেষত যুবকেরা রজব মাস এলেই পথে-ঘাটে, বাজারে যেখানেই সুযোগ পায় সেখানেই একটা ডেগ বা বড় হাড়ি বসায়। লালসালু কাপড় বিছিয়ে, বাঁশ দিয়ে ছাউনি দিয়ে, বিজলী বাতি জ্বালিয়ে, চকমকি কাগজ এবং বিভিন্ন ধরনের রং লাগিয়ে ঘর সাজিয়ে তার মধ্যে স্থাপন করে ডেগ। তারা একে বলে ‘খাজা বাবার ডেগ’। এটা একটা বিনা পুজির ধর্মব্যবসা।
♦34. ন্যাংটা বাবায় বিশ্বাস:
এরুপ বিশ্বাস করা যে ন্যাংটা বাবা ভবিষ্যত বা গায়েব জানেন তার ভাল-মন্দ করার ক্ষমতা আছে।
♦35. প্রাণীর ছবি, চিত্র, প্রতিকৃতি, মূর্তি, ভাস্কর্য,প্রতিমা ইত্যাদির হুকুম : কোন নেতা, লিডার বা স্মরণীয়-বরণীয় ব্যক্তিবর্গের ছবি, চিত্র, প্রতিকৃতি, মূর্তি ভাস্কর্য ইত্যাদি তৈরি করা, মাঠে-ঘাটে, অফিস-আদালতে ও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এগুলো স্থাপন করা, এগুলোকে সম্মান করা, এগুলোর উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ ইত্যাদি করা।
♦36. সমাধি, স্মৃতিস্তম্ভ, শহীদ মিনার : সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের স্মরণে সমাধি, স্মৃতিস্তম্ভ, স্মৃতিসৌধ বা শহীদ মিনার নির্মাণ, এগুলোকে সম্মান জানানো, সামনে দাঁড়িয়ে নীরবতা ১ মিনিট পালন করা ইত্যাদি।
♦37. অগ্নিপূজা এবং শিখা চিরন্তন, শিখা অনির্বাণ : ‘অগ্নি শিখা’ অগ্নিপূজকের উপাস্য দেবতা। তারা ভক্তি, প্রণাম ও নানা কর্মকান্ডের দ্বারা আগুনের পূজা করে থাকে। এ অগ্নিপূজা সম্পূর্ণ শিরক ও আল্লাহদ্রোহী কাজ। ‘শিখা চিরন্তন’ বা ‘শিখা অনিবার্ণের’ নামে অগ্নি মশালকে সারা দেশে ঘুরিয়ে ভক্তি শ্রদ্ধা জানানো এবং এগুলোর প্রজ্জ্বলনকে অব্যাহত রাখার জন্য বিশেষ ধরনের বেদীর ওপর এগুলো স্থাপন করা, অলিম্পিক মশাল সহ বিভিন্ন ক্রীড়ানুষ্ঠানের মশাল প্রজ্জ্বলনও শিরকের অন্তর্ভুক্ত।
♦38. মঙ্গল প্রদীপ :
হিন্দুদের অনুকরণে কোন অনুষ্ঠানের শুরুতে বা কোন প্রতিষ্ঠানের উদ্বোধন উপলক্ষে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে বিশেষ আনুষ্ঠানিকতা পালন করা।
♦39. তাছাওউফের শায়েখ বা পীরের কল্পনা :
তাছাওউফের শায়খ বা পীরের চেহারা, আকৃতি ইত্যাদি কল্পনা করে মোরাকাবা, ধ্যান, যিকির বা অন্য যে কোন ইবাদত করা শিরক।
♦40. গায়রুল্লাহর নামে যিকির বা অযীফা :
আল্লাহর যিকিরের ন্যায় কোন নাবী বা রসূল, পীর, ওলী-আওলিয়া, বুযুর্গ, আলিমের নাম জপ করা, বিপদের পড়লে তাদের নামের অযীফা পড়া। যেমন- ‘ইয়া রাহমাতুল্লিল আলামীন’, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ’, ‘নূরে রাসূল, নূরে খোদা’, ‘হক বাবা, হক বাবা’ ইয়া বড়-পীর আব্দুল কাদির জিলানী, ইয়া গাউছুল আযম, ইত্যাদি
.
🌼রসূল (সা) শিরক হ’তে বাঁচার জন্য আমাদেরকে দো‘আ শিখিয়েছেন:
اَللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوْذُبِكَ أَنْ نُشْرِكَ شَيْئًا نَعْلَمُهُ وَنَسْتَغْفِرُكَ لَمَا لاَ نَعْلَمُ
‘আল্লাহুম্মা ইন্না না‘ঊযুবিকা আন নুশরিকা শাইআন না‘লামুহ, ওয়া নাসতাগফিরুকা লিমা লা না‘লামুহ।
“হে আল্লাহ্, জেনে বুঝে শিরক করা থেকে আমরা আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং আমাদের অজ্ঞাত শিরক থেকে আপনার নিকটে ক্ষমা চাচ্ছি।” ( সহীহ-আদাবুল-মুফরাদ-৭১৬)
No comments