বিয়ে হচ্ছেনা তাই হতাশ? পড়ুন আর ধৈর্য ধরুন আল্লাহর পক্ষ থেকে উত্তম পুরস্কারের আশায়
আমাদের অনেক ভাই বোনই বিয়ে নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ভুগেন, কবে যে বিয়ে হবে। অনেক ভাই বোন তো এতই হতাশ হয়ে গিয়েছেন যে ভাবা শুরু করেছেন, তাদের বোধ হয় এই দুনিয়াতে আর বিয়েই হবে না। একবারে জান্নাতে যেয়ে হবে।
বস্তুত এমন ভাবার কোনই কারণ নেই। আপনি আজকে অবিবাহিত, আগামীকালও যে অবিবাহিত থাকবেন এমন কোন মানে নেই। যেকোন দিনই যেকোন কিছু ঘটে যেতে পারে।
//
এক ভাই খুব বিষণ্ণ থাকেন। মনের মত পাত্রী পান না। উনার যেমন রিকোয়ারমেন্টস সে অনুযায়ী মিলে না। শেষে ভাই, একের পর এক রিকোয়ারমেন্ট বাদ দিতে থাকেন এবং এক সময় সব রিকোয়ারমেন্টসই বাদ দিয়ে দেন, দুয়া করেন যে 'আল্লাহ তোমার ইচ্ছামতই একজনকে মিলায়ে দাও তাও অন্তত দাও।' ঠিক এমন একজন পাত্রীর খোঁজ পান যে কিনা ভাই এর সকল মানে সকল রিকোয়ারমেন্টস পূরন করে। দিন পনের কি বিশ আগে বিয়ে হলো তাদের। এক মাস আগেও কি তিনি ভেবেছিলেন এমন কিছু হবে?
.
আরেক ভাই বিয়ে করতে চান। কিন্তু চাকরি নেই। বাসা থেকে চাকরি না পেলে বিয়ে দিবেন না। দুয়া চলতে থাকে। হঠাত করে, একটা চাকরি পেয়ে যায় (আগের রাতেও জানত না যে পরের দিন চাকরি পাবে), কী ভাগ্য ঐ সময় একজন মেয়েরও খোঁজ পায়। দেখতে যেয়ে ঐ দিনই বিয়ে হয়ে যায় সাত দিনের মধ্যে।
.
আরেক ছাত্র ভাই। পড়ালেখাও শেষ করতে পারেনি দরিদ্রতায়। আফসোস করে মাস খানেক আগেও বলল 'জীবনেও বিয়ে হবেনা ভাই আমার দেখেন!' আমি তো কোন কাজও করতে পারব না। শুনলাম সপ্তাহ খানেক আগে বিয়ে হয়েছে।
.
২০১৮ তে এক অচেনা আন্টি (এক আপুর মা) ফোন দিয়ে অনেক করে বললেন পাত্র খুঁজে দিতে। বয়স সত্তর+। মেয়ের বিয়ে দেখে যাওয়া, নাতিপুতির সাথে সময় কাটানো কি ভাগ্যে নেই? কোন রকম একটা পাত্র হলেই হবে। কুফু না মিললেও হবে। ইত্যাদি। বললাম খালাম্মা আপনিই দুয়া করেন। আপনার দুয়াই যথেষ্ট। আল্লাহ এর ভান্ডার এ অভাব নেই, আপনার যেমন পাত্র পছন্দ তেমনই চান।
২০১৯ এর ডিসেম্বরে দেখলাম অচেনা নাম্বার থেকে হোয়াটসএপ এ বিয়ের কার্ডের ছবি এল। ঐ আপু পাঠিয়েছেন। বিয়ে তো বিয়ে, একবারে একজন বুয়েটিয়ান ভাই, কুফুও মিলে, দ্বীনদার সব দিক থেকে বেস্ট একজন পাত্রের সাথে বিয়ে।
.
আমার আরো দুইজন বোন। কত দুয়া করেছি তাদের বিয়ের জন্য !
তাদের বিয়ে হতে যাচ্ছে ইনশাআল্লাহ এই ঈদের আশে পাশেই। দ্বীনদার পাত্র খুঁজে খুঁজে প্রায় হতাশ, পরিবার থেকে শুধু টাকাওয়ালা, প্রবাসী দ্বীনের ছিটেফোটা নেই এমন টাইপ পাত্রের সন্ধান আনা হতো।
এরাও হয়ত ভেবেছিল কোনদিন বিয়েই হবে না কিনা এই দুনিয়াই ! মাস খানেক আগেও হয়ত ভাবত। অথচ মাঝের এই এক মাস বদলে দিয়েছে সব। দুই জনেরই দুইজন দ্বীনদার পাত্রের সাথে বিয়ে হতে যাচ্ছে। এমন পাত্র যে ফ্যামিলিও খুশি আর আমার এই বোনেরাও।
.
আরেক আন্টি ২০১৭ থেকে ফোন দেন। তখন থেকে পাত্র খুঁজি উনার মেয়ের জন্য। পাইনা। পাইনা বলতে মিলেনা। পরে কুফু মিলেনা খুব সাধারণ কিছু পাত্রের জন্য চেষ্টা করলেন। তাও বিয়ে কোন না কোন কারণে হতোনা। বয়স বেড়ে যাচ্ছে। কত কান্নাকাটি ! বলে বাবা এবার হজ্জে কত দুয়া করে এসেছি, মেয়েদেরকে এত ধার্মিক ভাবে বড় করেছি। কোন দিন ওরা কোন সম্পর্কে জড়ায়নি, আল্লাহ কীসের শাস্তি দিচ্ছেন !
বললাম, কোন শাস্তি না। আন্টি আল্লাহ পুরষ্কার দিতে চান তাই অপেক্ষা করাচ্ছেন। এইতো সেদিন হুট করে ফোন দিয়ে বললেন, সকালে হাঁটাহাঁটি করে যে আন্টিদের সাথে তাদের একজন এক পাত্রের খোঁজ দিয়েছে, সেদিনই দেখা দেখির ব্যবস্থা দুই পরিবারের, খোঁজ খবর নেওয়া তৃতীয় দিনের মাথায় বিয়ে।
//
যেহেতু আপনি জানেন না আল্লাহ'র টাইমিং সম্পর্কে, প্ল্যানিং সম্পর্কে। তাই হতাশ হবেন না।
আল্লাহ'র টাইমিং এ ভরসা রাখুন। দুয়া অব্যহত রাখুন। সময় খুব দ্রুতই চেঞ্জ হয়ে যাবে। আল্লাহ যখন আপনার ভাগ্য হুট করেই পরিবর্তন করে দিবেন, তখন এত দিনের কষ্ট অপেক্ষা গুলোকে একটা দুঃস্বপ্নের বেশি আর কিছুই মনে হবে না।
©Shah Muhammad Tonmoy
No comments