ক্লাসের ছেলেরা মেয়েদের নিয়ে যা ভাবে তাতে কি মেয়েদের খারাপ লাগে?
যৌনতা পছন্দ করে না এমন ছেলে মেয়ে নাই। সবাই করে - আর এটাই মানুষের ফিতরাত। আল্লাহ নারী পুরুষের মাঝে এই যৌনতাই একটা নিয়মত হিসেবে তৈরি করেছেন।তবে একটা সীমানা নির্ধারন করে দিয়েছেন।বিয়ে করতে বলেছেন।এবং নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন কাদের সাথে এই যৌন সম্পর্ক গুলো বৈধ কাদের সাথে অবৈধ।
.
ধরেন- শুকর খাওয়া- এটা মুসলমানদের কাছে হারাম।তাই নাম শুনলেই একটা অভক্তি চলে আসে - একটা ঘৃনা চলে আসে! কোনো দ্বীনদার ব্যক্তি খেলে সাথে সাথে বমি করে বসবে।তার কাছে এটা কিন্তু খাবার অনুপযোগী।
.
কিন্তু দেখেন! শুকর কিন্তু বিধর্মীরা খায়- তারা স্বাদ করেই খায়- তাদের কাছে এটা ঘৃনার নয়।
.
আবার চিন্তা করুন: কুকুর এর মাংশ ছাগলের মাংশের মতোই স্বাদ হবে! কিন্তু একজন মুসলমান ছাগলের মাংশ খুব স্বাদ করে খেলেও কুকুর খাওয়ার কথা বললে ঘৃনায় অভক্তিতে বমি করে বসবে।
.
প্রশ্ন হলো কেন?
.
কারন এখানে মুসলমানদের একটা মানদন্ড ঠিক করা আছে।সে আগেই নিজের মাইন্ডে এটা সেট করে নেয় যে এই এই খাবার খাওয়ার অনুপযোগী, হারাম,নিষিদ্ধ।ফলে এই খাবারের প্রতি এমনিতেই ঘৃনা তৈরি হয়। নাম শুনলেও দেহ মনে ঘিন ঘিন করে।
.
যখন একজন মুসলমান যৌনতার ক্ষেত্রেও এমন মাপকাঠি ঠিক করে নেয়- মনে বসিয়ে নেয় যে কাদের সাথে যৌনতা হারাম- কাদের সাথে জায়েজ - তখন অটোমেটিক ভাবে তার মাইন্ডে এ ব্যাপার গুলা সেট হয়ে যায়।
.
ফলাফল- সে বুঝে একজন মুসলমানের জন্য নিজের স্ত্রী বা দাসি ব্যতিত অন্য কোনো মেয়ের দিকে খারাপ ভাবে দৃষ্টিপাত করাও হারাম।চোখের জিনা। গুনাহ।
.
সে তখন এভাবেই বিষয়টা দেখে- যখন বেগানা কোনো নারীর প্রতি এসব কল্পনা চলে আসে তখন তার মাজে ঘৃনা তৈরি হয়- অভক্তি চলে আসে - নিজের কাছে খারাপ লাগে। খুব দ্রুত এখান থেকে বেড়িয়ে আসে।
.
একটা মেয়ের ক্ষেত্রেও এই কথা সত্য- যখন সে সীমানা ঠিক করে নিবে যে তার স্বামী ছাড়া তাকে আর কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।কারন এটা ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ! এমন কাউকে কল্পনা করলেও তার জন্য ব্যভিচারের গুনাহ হবে তখন সে নিশ্চিত ভাবে বেগানা পুরুষদের নিয়ে ভাবাটাকে অপরাধ হিসেবে গন্য করবে।
.
যখন কোনো নারীর কাছে পরপুরুষকে চিন্তা করাকে অপরাধ হিসেবে মনে হবে তখন তার মাঝে আত্মমর্যাদাবোধ তৈরি হবে।তখন সে যদি বুঝে অন্য কোনো পুরুষ তাকে নিয়ে ভাবে তাহলে তার মাঝে ঘৃনাবোধ জাগ্রত হবে। তার খারাপ লাগবে।
.
কিন্তু যদি কোনো মেয়ের নিজের কাছেই এই হালাল হারামের সীমানা জানা থাকে না।নিজে এই সীমানা মান্য করে না তখন তার কাছে এই ব্যাপারগুলা শুকর খাওয়ার মতোই স্বাভাবিক মনে হবে।
.
আজকে একটা পোষ্ট দেখছিলাম- ক্লাসমেট মেয়েদের ভেবে ক্লাসের ছেলেরা হস্তমৈথুন করে থাকে। কিন্তু এই কথাও সত্য অনেক মেয়েও এরকম ছেলেদের নিয়ে ভেবে মাস্টারবেশন করে।
.
এখানে ছেলে মেয়ে কারো মাঝেই আত্মমর্যাদাবোধ নাই। কারো মাঝেই আল্লাহর ভয় নাই! কারো মাঝেই নিজেকে পবিত্র রাখার চেতনা নাই।
.
তাদের কি আল্লাহর দরবারে নিজেদের পবিত্র অবস্থায় হাজির করার ইচ্ছা আছে?
.
যদি থাকতো তাহলেই আত্মমর্যাদাবোধ তৈরি হতো।
.
একটা মেয়ের মাঝে যৌন চাহিদা সৃষ্টি হয় ১৪ বছর বয়সের মধ্যেই। একটা ছেলের মাঝেও ১৪/১৫ মাঝেই তৈরি হয়।
.
আমি যে বয়স উল্লেখ করেছি- এই বয়সে যৌনতা তীব্র ভাবেই অনুভব করে- এই সময়টা একই সাথে যেমন কৌতুহলের তেমনি তীব্রভাবে দৈহিক চাহিদার পুরনের জন্য তৃষ্ণার্ত।
.
এই জন্য হাদিসে এই বয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়াটা বাবার একটা দায়িত্ব হিসেবে বর্ননা করা হয়েছে। এবং হুমকি দেয়া হয়েছে যদি বিয়ে না দেওয়া হয় সন্তানদের তবে তারা যদি গুনাহ করে তবে এই গুনাহ গুলো পিতার আমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে।
.
ভাবেন- ১৪/১৫ বছরের ছেলেমেয়েরা গোপনে খারাপ চিন্তা করছে- হস্তমৈথুন মাস্টারবেশন করছে - রাতে গোপনে গোপনে খারাপ কথা বলছে- ডার্করেস্টুরেন্টে এ যাচ্ছে সব গুনাই পিতার আমল নামায় যুক্ত হবে। এমনকি সন্তান ব্যভিচারে লিপ্ত হলে পিতাকে কিয়ামতের দিন ব্যভিচারীর কাতারে দাড়াতে হবে।
.
যারা বলে এত ছোট বয়সে মেয়েদের/ ছেলেদের মনমানষিকতা বিয়ের উপযুক্ত না এগুলা ফাও যুক্তি।
বরং কৈশোরই হলো ছেলেমেয়ের বিয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয় সময়। ৩০ বছরের পর একটা ছেলে বিয়ে না করতে চাইলে আমি অবাক হবো না।কিন্তু ১৫ বছরের একটা ছেলের বিয়ের প্রয়োজন ঐ ৩০ বছরের পুরুষের থেকে অনেক বেশি।
.
যারা বিয়ে না করে ৩০/৩৫ বছর পার করে দিয়েছেন তারা কতজন বলতে পারবেন - এই ৩০ বছরের মধ্যে তারা যৌনতা সম্পর্কিত কোনো গুনাহে জরিত নন? নিজের ক্ষেত্রেই ভাবেন- যৌনতা সম্পর্কিত গুনাহে কত বছর থেকে জরিত হইছেন? প্রতিদিন গুনাহ না করলেও সপ্তাহে কতবার গুনাহে লিপ্ত হোন?
.
আজকে ছেলেরা মেয়েদের নিয়ে ভাবছে অধিকাংশ মেয়ে এটা শুনে খুসি হয়! অনেক মেয়ে তো নিজের ফিগার অন্যদের দেখাতে খুবই পছন্দ করে।
.
প্রথম কারন হলো: আল্লাহর ভয় অন্তরে নেই। যদি আল্লাহর ভয় অন্তরে তৈরি না হয় তবে এসব ঘটনা কোনো মেয়ের জন্যই খারাপ লাগার কথা না।
.
দ্বিতীয় কথা হলো: সময় মতো বিয়ে না দেয়া- ভাই যৌনতা খাবারের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় বিষয়।যদি শারিরিক সমস্যা না থাকে তবে নারী পুরুষের এটা নিত্যদিনের প্রয়োজন।বিয়ে না দিলে কিশোর কিশোরীরা সারা দিনই এই ফ্যান্টাসিতে ভোগে।অনেক নামধারী দ্বীনদার ছেলে মেয়ের ইনবক্সগুলো এসব দিয়েই ভর্তি থাকে,সেখানে যারা দ্বীনদার না তাদের কি অবস্থা ভাবুন।তাই বিয়ে না দিয়ে এসব বন্ধ করতে চাওয়া মানে হলো সাগর ছেড়ে দিয়ে পুকুরের বাধ আটকানোর মতো অসম্ভব।
.
তৃতীয় কারন হলো: ছেলেরা যেমন নষ্ট আছে- কোনো বাজ বিছার ছাড়া যাকে তাকে নিয়ে ভাবতে বাধে না তেমনি মেয়েদের মধ্যেও এমন আছে।
.
তাই ভাই এসব আফসুস করা বন্ধ করেন যে মেয়েরা জানার পরও এদের কেন খারাপ লাগে না- তাদের আত্মমর্যাদাবোধে লাগে না??
.
উত্তর হলো এসব মানুষদের মধ্যে তো দ্বীনি জজবাই তৈরি হয় নাই- হারাম হালালের ভিক্তি মনে বসে নাই। ইমানি গাইরত বোধ নাই এছাড়া বিয়ে না হওয়ার ফলে নিজেরাও এক ফ্যান্টাসিতে থাকে এসব নিয়ে- ফলে এটা চলবেই- সমাধান ইসলামের মধ্যেই আছে।
.
আমাদের মধ্যে ইমানি চেতনা জাগ্রত করতে হবে।হালাল হারামের ভিক্তি তৈরি করতে হবে যাতে হারাম কোনো কিছু ভাবলেই বমি চলে আসে..
.
আর এটা তখনই সম্ভব যখন আমরা ইমান আকিদা নিয়ে জ্ঞান অর্জন করবো- রবকে চিনবো- দ্বীনপালনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবো!
.
আজকে যেসব গ্রুপ পেইজ- থেকে মেয়েদের প্রতি অভিযোগ করা হয় - এসব নিয়ে লেখালেখি হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় বিশুদ্ধ আকিদার দাওয়াত দিতে এদের কোনো ভুমিকা নাই।
.
আমি বারবার বলি: একজন মুসলমানের পক্ষে তখন গুনাহ ছাড়া সম্ভব যখন তার ইমান বিশুদ্ধ হবে।আর ইমানের ভিক্তি হলো আকিদা-।
.
তাই যারা বাস্তবেই চান আমাদের সমাজ পরিবর্তন হোক- তারা দ্রুত বিয়ের দাওয়াত দেয়ার পাশাপাশি বিশুদ্ধ আকিদার দাওয়াত দিতে থাকেন- ইনশাআল্লাহ আশা করা যায় সমাজের যুবক যুবতির মধ্যে পরিবর্তন আসবে...
.
#biyeordhekdeenBn
No comments