বোন - সময় থাকতে বিয়ে করুন
বোন, সময় থাকতে বিয়ে করুন!
.
মনে রাখবেন, সময় ও স্রোত কারো জন্য বসে থাকে না। সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করা বুদ্ধিমানের পরিচয়। তাই সময়ের কাজ সময় থাকতেই করতে হয়। তা না হলে জীবন শায়ান্থে এসে আফসুস করা ছাড়া উপায় থাকে না।
.
আমাদের সমাজের চিত্র এমন যে, লেখাপড়া ক্যারিয়ার ইত্যাদির জন্য অনেক মেয়ে বিয়ের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। কিন্তু যত বড় ক্যারিয়ার থাকুক না কেন ছেলেরা চাইবে তার চাইতে কমপক্ষে ৫/৬ বছর ছোট কোন মেয়েকে বিয়ে করতে। সেই হিসেবে শিক্ষিত সমাজে সবচেয়ে বেশি ডিমান্ডের মেয়েরা হয় ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী। ইদানীং ছেলে মেয়েদের অবৈধ সম্পর্ক বেড়ে যাওয়ার কারনে ছেলেরা ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েদের বৌ হিসেবে চায়। কারন ছেলেদের ধারনা প্রেম-প্রীতির এই যুগে মেয়েরা ১৬/১৭ বয়সেই প্রেমে পড়ে যায়, যাদের একটা অংশ ১৮ পার না হতেই সতীত্ব হারায়। মেয়েদের প্রতি এই অবিশ্বাসের কারনে ছেলে পাত্ররা অনুর্ধ ১৮ মেয়েদেরকেই পছন্দ করে!
.
এছাড়া মেয়েদের চেহারায় যে কোমলতা থাকে তা ২৫/২৬ বছর পর থেকে ধীরে ধীরে মুছে যেতে থাকে এবং এক সময় তা মুরুব্বি টাইপের চেহারায় রূপান্তরিত হয়। তাইতো আমরা কখনও কোন গল্পের নায়িকার বয়স ৩০ দেখি না। এমনকি কোন নাটকে নায়িকাকে নায়কের চাইতে বয়সে বড় হতেও দেখা যায় না। দেখা যায় না কোন কবিকে তিরিশোর্ধ নারীকে নিয়ে কবিতা লিখতে। আর ছেলেরা তাদের আড্ডায় যেসব মেয়েদের নিয়ে রসালো আলাপ করে তাদের কারো বয়স ২৪/২৫ এর বেশি না।
.
আমার স্কুল বয়েসের সহপাঠী বান্ধবীদের দেখলে আজ খুব লজ্জা পাই। মুখ দিয়ে তুই-তুমি বের হতে চায় না, কারণ তাদেরকে এখন মুরুব্বী মুরুব্বী লাগে। আমার যৌবন বয়সে আমার চাইতে অনেক ছোট যে মেয়েকে দেখে উদাসীন হয়ে যেতাম, তাকে এখন দেখলে 'খালাম্মা খালাম্মা' লাগে।
.
আমার বন্ধুদের একজনের বড় বোন ডাক্তার। ৬ বছর ধরে 'যোগ্য' পাত্র খুজতে খুজতে তিনি নিজেই অযোগ্য হবার যোগাড় হয়েছেন। বয়স ৩৫ চলছে। ওনার পরিবারের প্রথম টার্গেট ছিল ডাক্তার পাত্র ছাড়া বিয়ে করবে না। ২৯ বছর বয়সে যখন বিয়ের সিদ্ধান্ত নিল তখন কিছু সিনিয়ার অবিবাহিত ডাক্তার পাত্র পাওয়া যাচ্ছিল কিন্তু সেগুলো তাদের পছন্দ হচ্ছিল না। পাত্র খুজতে খুজতে বয়স এখন ৩৫-এ এসে দাঁড়িয়েছে। এখন আর ডাক্তার পাত্র পাচ্ছে না। মনে হয় আর পাবেনও না। এখন 'অ-ডাক্তার' ছেলে পেলেও চলবে। ইভেন জুনিয়ার কোন ব্যাপার না। হা হা হা!
.
আমার বন্ধুর মামাত বোন। বর্তমানে এই আপুটি একজন উচ্চ শিক্ষিত, বিদেশে উচ্চতর ডিগ্রী নিতে গিয়ে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। ওনার জীবনের লক্ষ্যই ছিল উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া। সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে কিন্তু ততক্ষনে বিয়ের বয়স পার হয়ে গেছে। এখন এত এর ডিগ্রী সত্ত্বেও পাত্র পাচ্ছেন না। ৩৮+ এই আপুটির আজ উচ্চতর ডিগ্রী আছে কিন্তু সংসার করার মানুষটি নাই; আফসোস।
.
৩৮ বছর বয়সী আর এক আপুর সাথে পরিচয় সামুয়ার ব্লগে। আমাকে তার বিয়ের জন্য ঘটকালীর দায়িত্ব দিয়েছেন। পারিবারিক কী এক ঝামেলার কারনে এখনো বিয়ে করতে পারেননি। এখন সব ঝামেলা থেকে তিনি মুক্ত। বিয়ে করতে পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু তার এই প্রস্তুতি নিতে নিতে যে তার বিয়ের পাত্র হারিয়ে গেছে সেটা তিনি টের পান নাই!
.
আসলে সময় ও স্রোত কারো জন্য বসে থাকে না -শিশুকালে ভাব সম্প্রসারণ লিখে গাদা গাদা নাম্বার পাওয়া এসব শিক্ষনীয় প্রবাদকে আমরা পরীক্ষার খাতাতেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছি, বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করি নাই, তাই তো বাংলাদেশের প্রতি ১০ জন মেয়ের মধ্যে ১ জনের আজ স্বামী নাই!
.
____________
সংগৃহীত ও পরিমার্জিত!
No comments