হারামজাদা বলে গালি দেয়া যাবে কি?
"হারামজাদা" শব্দটি আমাদের মাঝে বহুলপ্রচলিত।
আমরা অনেকেই হয়তো না জেনে বা দুষ্টুমি
করে অপরকে "হারামজাদা" বলে ফেলি।
অনেক সময় বাবা মাও ঠাট্টা-মশকারা করে তার সন্তানের ক্ষেত্রে এ কুৎসিত শব্দটি প্রয়োগ করে ফেলেন।
কিন্তু যদি জানতাম এটি কত ভয়ঙ্কর ও মারাত্মক গালি তাহলে হয়তো কখনোই কাউকে বলতাম না। আর বললেও যাকে বলা হত সে সহ্য করে নিতে পারত না।
আপনি কি জানেন "হারামজাদা" মানে কী? "হারামজাদা" মানে অবৈধ বা জারজ সন্তান। বেভিচারের মতো মারাত্মক পাপ কাজের ফলে
যে সন্তান জন্ম নেয় তাকে ফার্সি ভাষায় "হারামজাদা" বা অবৈধ সন্তান বলা হয়। আফসোস! বর্তমান সমাজে আমরাও এ কুশব্দটি যার তার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করে দিচ্ছি।
বাস্তবে কেউ জারজ হলেও তাকে জারজ বলে গালি দেয়া হারাম। সুতরাং কেউ যদি প্রকৃতপক্ষে জারজ না হয়ে থাকে আর আমরা তাকে জারজ বলে গালি দেই তাহলে তো ডবল গুনাহ হবে। গালি দেওয়ার গুনাহ এবং অপবাদের গুনাহ। আর উভয়টাই কবিরা বা মারাত্মক গুনাহ। তাছাড়া অপরকে গালি দেয়া মানে তার হক নষ্ট করা বা তার মান সম্মানে আঘাত হানা।
আর এ গুনাহ আল্লাহ তা'আলা ততক্ষণ ক্ষমা করবেন না যতক্ষণ না ঐ বান্দা ক্ষমা করে। তাই সাবধান!!
আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন, "আর জেনে রাখ, তোমাদের মাঝে আল্লাহর রাসূল সা. বিদ্যমান রয়েছেন, যদি তিনি অধিকাংশ ব্যাপারে তোমাদের অনুসরণ করতেন তাহলে তোমরাই কষ্ট পেতে। কিন্তু আল্লাহ তা'আলা তোমাদের ইমানকে তোমাদের নিকট প্রিয় ও হৃদয়গ্রাহী করে দিয়েছেন এবং কুফরি, পাপাচার ও অবাধ্যতাকে অপ্রিয় করে দিয়েছেন। (সূরা হুজুরাত ৭)
অন্যত্রে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
"আর যারা মুমিন নরনারীদের কষ্ট দেয় এমন কোনো কাজের জন্য যা তারা করেনি তারা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।
(সূরা আহযাব ৫৮)
রাসূলুল্লাহ সা. বলেন, মুসলমানকে গালি দেয়া পাপাচার আর হত্যা করা কুফরি।
(বুখারী ৪৮ শামেলা)
হযরত বিলাল রা. ছিলেন হাবাশি বংশের।
তাঁর গায়ের রঙ ছিল কালো।
একদা আবু যর রা. কোনো কারণে তাঁর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বলেছিলেন,
"হে কালো মহিলার ছেলে"।
তিনি এ কথা সহ্য করতে না পেরে রাসূল সা.
এর দরবারে আবু যর রা. এর নামে নালিশ করেন।
রাসূল সা. ধমক দিয়ে তাঁকে বললেন,
হে আবু যর! তোমার মাঝে এখনও জাহেলিয়াতের বর্বরতা রয়ে গেছে
(মুসলিম ৪৪০৩ শামেলা)
No comments