Header Ads

Header ADS

আইয়ামে বীজ কি? আইয়ামে বীজের রোজার রাখার ফজিলত

শুরু হচ্ছে "আইয়ামে বীজ"

আইয়ামে বীজ কি?
=============

আইয়ামে বীজ দুটি আরবি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। আইয়ামে অর্থ দিবসসমূহ, আর বীজ অর্থ শুভ্র, সাদা, শ্বেত, খাঁটি, নির্ভেজাল। চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখকে আইয়ামে বীজ বলা হয়। ওই তিন দিনে চাঁদ পূর্ণতা লাভ করে, প্রচণ্ড আলো বিকিরণ করে, চাঁদের আলো কানায় কানায় ভরে যায়, জ্যোৎস্নার প্রচণ্ডতায় ওই রাতগুলো শুভ্র ধবধবে ও আলোকিতভাবে দিনের আলোর মতো দৃশ্যমান হয়। এ দৃশ্য সবাই অবলোকন করে, বিশেষত মরুভূমিতে এটি বেশি দৃষ্টিগোচর হয়। আলোকিত ওই রাতগুলোকে দিনের সাথে সম্পৃক্ত করে ‘আইয়ামে বীজ’ নামকরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য, আরবিতে ইয়াওম শব্দ দ্বারা দিন ও রাত উভয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। 

আইয়্যামে বীজের রোজা সম্পর্কিত হাদিসঃ
=============================

🌙আবু হুরায়রা রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘আমার প্রিয়তম বন্ধু আমাকে তিনটি ব্যাপারে বিশেষভাবে অসিয়ত করেছেন:
 ১. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা
 ২. দুই রাকাত সালাতুত্ দুহা আদায় করা এবং
 ৩. রাতে ঘুমানোর আগেই যেন বিতর নামাজ আদায় করি'
 (বুখারি)
🌙রাসূলুল্লাহ সা: বলেন : ‘প্রতি মাসে তিনটি রোজা একযুগ রোজার সমতুল্য, মনোরম সে দিন তিনটি হলো ১৩, ১৪ ও ১৫'
(নাসায়ী)
🌙ইবনু আব্বাস রা: বলেন : ‘রাসূলুল্লাহ সা: সফর ও মুকিম অবস্থায় কখনো আইয়ামে বীজের রোজা ভঙ্গ করতেন না’ 
(নাসায়ী)
🌙হজরত কাতাদাহ (রা.) বলেন: ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখার নির্দেশ দিতেন এবং তিনি বলেন, তা এক বছরের রোজার সমতুল্য।’ 
(আবু দাউদ ও নাসায়ি)

সিয়াম পালনের ফযীলতঃ
=================
💜হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন :
‘‘মানুষের প্রতিটি ভাল কাজ নিজের জন্য হয়ে থাকে, কিন্তু সিয়াম শুধুমাত্র আমার জন্য, অতএব আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব। 
(বুখারী : ১৯০৪)

💜সহীহ ইবনু হিববান কিতাবে আছে আবূ উমামা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন-
আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যার কারণে আমি জান্নাতে যেতে পারি। তিনি বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমমর্যাদাসম্পন্ন কোন ইবাদাত নেই।
(নাসাঈ : ২২২১)

💜হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তা'য়ালা বলেন,
‘‘মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, কিন্তু সিয়ামের বিষয়টি ভিন্ন। কেননা সিয়াম শুধুমাত্র আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব। (মুসলিম : ১১৫১)

অর্থাৎ কি পরিমাণ সংখ্যা দিয়ে গুণ করে এর প্রতিদান বাড়িয়ে দেয়া হবে এর কোন হিসাব নেই, শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন সিয়ামের পুণ্যের ভান্ডার কত সুবিশাল হবে।

💜রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
‘‘সিয়াম ঢাল স্বরূপ। এ দ্বারা বান্দা তার নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে পার।’’
(আহমাদ : ১৫২৯৯)

💜রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : "সিয়াম ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক মজবুত দূর্গ।’’
(আহমাদ : ৯২২৫)

💜নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, তদ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন। 
(বুখারী : ২৮৪০; মুসলিম : ১১৫৩)

💜রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :
"যার হাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র জীবন সে সত্তার শপথ করে বলছি, সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ তা‘আলার কাছে মিশকের ঘ্রাণের চেয়েও প্রিয় হয়ে যায়।"
(বুখারী : ১৯০৪; মুসলিম : ১১৫১)

💜সিয়াম হল গুনাহের কাফফারা। আল্লাহ তাআলা বলেন, 
নিশ্চয়ই নেক আমল পাপরাশি দূর করে দেয়। 
(সূরা হুদ : ১১৪)

💜জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। যার নাম রাইয়্যান। কিয়ামতের দিন শুধু সিয়ামপালনকারীরা ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, সিয়াম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। তারা প্রবেশ করার পর ঐ দরজাটি বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ আর সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে ঢুকতে পারবেনা।
(বুখারী : ১৮৯৬; মুসলিম : ১১৫২)

মৃত্যু পর্যন্ত একান্ত ওজর ব্যাতিত এই আমল না ছাড়ার নিয়ত করি। যারা এখনো শুরু করিনি, তারা আজ রাতে সেহরি খেয়েই শুরু করে দিই ইন শা আল্লাহ।
ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ

★★★ সংগৃহিত ★★★

No comments

Powered by Blogger.