Header Ads

Header ADS

ফিলিস্তিনিদের জন্য লকডাউন কোয়ারেন্টাইন নতুন কিছু নয়! আজ পুরো বিশ্ব তাদের অবস্থা বুঝতে পারছে

ফিলিস্তিনের এক স্কলার আবদালহাদি আলিজলা, করোনা ভাইরাসের কারণে উন্নত বিশ্ব লকডাউনের ব্যাপারে কিছু কথা লিখেছে। আমি অনুবাদ করে দিলাম।

করোনা মহামারীতে পৃথিবীর অনেক দেশ আজ লকডাউন এবং কোয়ারেন্টাইনে। লকডাউন আর কোয়ারেন্টিন আমাদের ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন কিছুনা। ২০০৪ সালে আমি একটা ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দেয়ার আমন্ত্রন পাই। কিন্তু বিমানবন্দরে ইজরায়েলি অফিসিয়ালরা আমাকে আলাদা করে তিন দিন রাখে কোয়ারেন্টিনে। কেন আমি জানিনা? এরপর লকডাউনের কারণ দেখিয়ে আমার যাত্রা বাতিল করা হয়। আমি যোগ দিতে পারিনা।
বছরের পর বছর আমরা ফিলিস্তিনিরা লকডাউনে। আমাদের শত শত ছাত্ররা বিদেশে স্কলারশিপ পেয়েও যেতে পারেনা কারণ দেশত্যাগের অনুমতি মিলেনা। ২০০৬ সালে ইজরায়েল ২০ লক্ষ ফিলিস্তিনের উপর কোয়ারেন্টিন জারি করে গাজা উপত্যকায়। তার কোথায় যেতে পারবে না, কোথাও থেকে আসতে পারবে না, এমন কি গাজাতেই ফ্রিলি মুভ করতে পারবেনা। প্রিয় বিশ্ব আজ তোমাদের ঘরে আটকে যেমন লাগছে সেদিন আমাদের তেমনি লেগেছিলো।

আজকে তোমাদের শিশুরা লকডাউনের কারণে ঘর থেকে বেরোতে পারছে না, আতংকে শৈশবের সব আনন্দ ভুলে যাচ্ছে,খেলতে পারছে না। 
আমাদের ফিলিস্তিনি শিশুরা শৈশবে বুলেট বোমার আওয়াজ শুনে বড় হয়। তারা বাইরে খেলতে পারেনা, মায়েরা তাদের যেতে দেয়না, কারণ হুট করে হয়ত কোন বুলেট এসে কেড়ে নিতে পারে প্রাণ প্রিয় সন্তানের প্রাণ।

ফিলিস্তিনের শত শত মেধাবী গ্র‍্যাজুয়েটদের, একাডেমিকদের লাইফ, ক্যারিয়ার কেড়ে নেয়া হচ্ছে গত ১৫ বছর ধরে। গত ১৫ বছর ধরেই গাজা কখনো আংশিক, কখনো পূর্ণাঙ্গ লক ডাউনে ছিলো এবং আছে।

প্রিয় পৃথিবী আজকে লকডাউনের কারণে তোমাদের সিভিল রাইটস প্র‍্যাক্টিক্স করতে দেয়া হচ্ছেনা। আমরা ফিলিস্তিনিরা গত দেড় যুগ ধরে নাগরিক অধিকার কি সেটাই জানিনা। আমাদের নাগরিক অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হচ্ছে৷

আজকে সারা পৃথিবীতে হাসপাতালে জায়গার অভাব, নার্সের অভাব, ডাক্তারের অভাব। শুধুমাত্র ২০১৪ সালের আক্রমনে ইজরায়েল ফিলিস্তিনের ১৭ টি হাসপাতাল, ৫৬ টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং ৪৫ টি এম্বুলেন্স ধ্বংস করেছে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু আমাদের কাছে নতুন কিছুনা।

প্রিয় পৃথিবী ওয়েলকাম টু লকডাউন 
তোমাদের জন্য যেটা আজ জরুরী অবস্থা 
ফিলিস্তিনিদের জন্য সেটা বাস্তবতা, প্রতিদিনকার জীবন।

আশাকরি সারা পৃথিবী এবার ফিলিস্তিনিদের কষ্টটা বুঝবে৷ তাদের অধিকারের জন্য তাদের লড়াইয়ে সমর্থন দিবে। কারণ পৃথিবীর কোন প্রান্তে একজন মানুষের প্রতিও অমানবিক আচরণ করা হয়, বিশ্বমানবতা সেখানেই হেরে যায়।

আমরা ফিলিস্তিনিরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যাতে সব দেশের এই করোনা ক্রাইসিস দ্রুত কেটে যায়৷ পৃথিবী যাতে আবার সুন্দর হয়ে উঠে।
- আবদালহাদী আলিজলা।

আজকে ইজরায়েল, আমেরিকা সহ উন্নত বিশ্ব লকডাউনে।

এই ক্রাইসিস কেটে গেলে মানুষ হিসেবে ফিলিস্তিনিদের উপর হওয়া অন্যায়ে আমাদের উপলব্ধি হোক। সৌদি আরব ইয়েমেনের নিরীহ মানুষের সাথে যে জেনোসাইড করছে বিশ্ববিবেক জেগে উঠুক তার বিরুদ্ধে৷ আমেরিকা, ইজরায়েলের মত দেশ যাতে বুঝে, দিনের পর দিন আতংকে কাটানোর মানেটা কি৷ 
আজকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট করোনাতে সে দেশে কত লোক মারা যেতে পারে এস্টিমেট করেছেন এক থেকে আড়াই লাখ মানুষ।

আর ফিলিস্তিনিদের প্রতিদিন রাতে এটা হিসেব করতে হয়, আগামীকালের সকালটা দেখতে পারবে তো?

করোনার কারণে আজ চীন, আমেরিকার মত রাষ্ট্র গুলো বলছে, বিশ্ব একতাই পারে নাকি করোনাকে হারাতে। সেই একতা কি ফিলিস্তিনিদের অধিকার বাদ দিয়ে হবে? সেই একতা কি ইয়েমেনি, বেলুচিস্তানের স্বাধীনতাকামী জনগণ কে বাদ দিয়ে হবে?

এখনো কি আপনারা বুঝতে পারছেন না, যুদ্ধ নয়, একমাত্র এমপ্যাথি, এমপ্যাথিই পারে আমাদের পৃথিবীটাকে সুন্দর করতে।

No comments

Powered by Blogger.