বিয়েতে অবশ্যই পালনীয় ১১টি সুন্নত
১) মাসনূন বিয়ে, সাদা সিধে ও অনাড়ম্বর হবে, যা অপচয়, অপব্যয়, বেপর্দা ও বিজাতীয় সংস্কৃতি মুক্ত হবে এবং তাতে যৌতুকের শর্ত বা সামর্থের অধিক মহরানার শর্ত থাকবে না। তাবারানী আউসাত, হাদিস নং- ৩৬১২
২) সৎ ও খোদাভীরু পাত্র-পাত্রীর সন্ধান করে বিয়ের আগে পয়গাম পাঠানো। পাত্র পাত্রী দেখা সম্ভব হলে, দেখে নেয়া মুস্তাহাব। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে ঘটা করে পাত্রী দেখানোর যে প্রথা আমাদের সমাজে প্রচলিত তা সুন্নতের পরিপন্থী ও পরিত্যাজ্য। বুখারী ৫০৯০
৩) শাউয়াল মাসে এবং জুময়ার দিনে মসজিদে বিয়ে সম্পাদন করা। উল্লেখ্য, সব মাসের যে কোন দিনই বিয়ে করা জায়েজ আছে। মুসলিম শরীফ ১৪২৩
৪) বিয়ের খবর প্রচার করা এবং বিয়ের পর আকদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত লোকদের মাঝে খেজুর বণ্টন করা। বুখারী শরীফ : ৫১৪৭
৫) সামর্থানুযায়ী মোহর ধার্য করা।
আবু দাউদ : ২১০৬
৬) বাসর রাতে স্ত্রীর কপালের উপরের চুল হাতে নিয়ে এই দোয়া পড়া : “আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা খয়রাহা ওয়া খয়রা মা জাবালতুহা আলাইহি ওয়াওযুবিকা মিন শাররিহা মিন শাররিমা জাবালতাহা আলাইহি”।
আবু দাউদ : ২১৬০
৭) স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি করবে, তার পর যখনই সহবাস এর ইচ্ছা হয়, তখন প্রথমে নিম্নোক্ত দু’আ পড়ে নিবে : “বিসমিল্লাহ, আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা।”
মুসলিম শরীফ : ১৪৩৪
(উপরোক্ত দোয়া না পড়লে শয়তানের তাছীরে বাচ্চার উপর কু-প্রভাব পড়ে। অতঃপর সন্তান বড় হলে, তার মধ্যে ধীরে ধীরে তা প্রকাশ পেতে থাকে এবং বাচ্চা নাফরমান ও অবাধ্য হয়। সুতরাং বাবা মাকে খুবই শতর্ক থাকা জরুরি)
৮) বাসর রাতের পর স্বীয় আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, শুভাকাক্সিক্ষ এবং গরিব মিসকিনদের সাধ্য অনুযায়ী ওলিমা খাওয়ানোর আয়োজন করা। মুসলিম শরীফ : ১৪২৭
৯) কোন প্রকার যৌতুক চাওয়া হারাম। আহসানুল ফাতাওয়া : ৫/১৩
১০) শর্ত আরোপ করে বর যাত্রীর নামে বরের সাথে অধিক সংখ্যাক লোকজন নিয়ে যাওয়া এবং কনের বাড়িতে মেহমান হয়ে কনের বাবার ওপর বোঝা সৃষ্টি করা আজকের সমাজের একটি জঘন্য কু-প্রথা, যা সম্পূর্ণ রূপে পরিত্যাগ করা আবশ্যক। মুসনাদে আহমাদ : ২০৭২২
১১) ওলিমায় অতিরিক্ত ব্যয় করা কিংবা খুব উচু মানের খাবারের ব্যবস্থা করা জরুরি নয়। বরং সামর্থানুযায়ী খরচ করাই সুন্নত আদায়ের জন্য যথেষ্ট। যে ওলিমায় শুধু ধনী ও দুনিয়াদার লোকদের দাওয়াত দেওয়া হয়, দ্বীনদার ও গরিব গরিব-মিসকিনদের দাওয়াত দেওয়া হয় না, সে ওলিমাকে হাদিসে নিকৃষ্টতম ওলিমা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সুতরাং এ ধরনের ওলিমা আয়োজন থেকে বিরত থাকা উচিত। আবু দাউদ : ৩৭৫৪
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সুন্নত মোতাবেক বিয়ে করার তৌফিক দিন। আমিন!
No comments